সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি

     সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি ? সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কেন পড়ব ?

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার প্রাচীনতম ও অন্যতম শাখা যার বাংলা পুরকৌশল বিদ্যা। সঙ্গত কারনেই সারা পৃথিবীর প্রকৌশল বিদ্যায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায় থাকে এই শাখাটি। স্বপ্ন যাদের দেশ গড়ার তাদের জন্যই পুরকৌশল। একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সাহায্য করে থাকেন। কারিগরি দক্ষতা আর সৃজনশীলতা থাকলে এ পেশায় সফলতা অর্জন করা খুবই সহজ। আবাসন খাত, উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহনশীল ও টেকসই শিল্পনির্ভর উন্নয়নের জন্য একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজাইন, কনস্ট্রাকশন এবং রক্ষণাবেক্ষন এর প্রকৌশলী বিজ্ঞান। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পৃথিবীর প্রাচীনতম ইঞ্জিনিয়ারিং বলতে গেলে যে বিষয়টি মানুষের মাথায় খেলা করে তা হলো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বা পুরকৌশল। একজন সাধারণ মানুষ ইঞ্জিনিয়ার বলতে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকেই কল্পনা করে থাকেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং সভ্যতার শুরু থেকেই বিস্তার লাভ করে আসছে। বাংলাদেশের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের ছোঁয়া লাগেনি। সবচেয়ে পুরাতন, বড় এবং সকল প্রকৌশল জ্ঞানের সমন্বয় এই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রকৌশল জ্ঞান এর মা বলা হয়। সবচেয়ে পুরাতন, বড় এবং সকল প্রকৌশল জ্ঞানের সমন্বয়।

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ভাগগুলি

    1. Structural Engineering – স্ট্রাকচারাল প্রকৌশল

    2. Geotechnical Engineering – মৃত্তিকা প্রকৌশল 

    3. Transportation Engineering – পরিবহন প্রকৌশল

    4. Water Resource Engineering – পানি সম্পদ প্রকৌশল

    5. Environmental Engineering – পরিবেশ প্রকৌশল

    6. Earthquake Engineering – ভুমিকম্প প্রকৌশল

    7. Urban Planning Engineering – নগর উন্নয়ন বা নকশা

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্লগ , Civil Engineering Bangla Blog

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বেসিক নলেজ

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বা পুরকৌশলী কি কাজ করে থাকে

    পরিকল্পনা, ডিজাইন, গঠন এবং রক্ষনাবেক্ষন করার কাজ করেন একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা জরিপের কাজ করে থাকে, প্রযুক্তিগত প্রতিবেদন দেয়, এমনকি প্রকল্প ব্যবস্থাপক এর কাজও করে থাকে। 

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর পরিসর 

    যেহেতু সময়ের সাথে সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর পরিসর বাড়ছে তাই এর অনেক শাখা বের হয়েছে। এদের উল্লেখযোগ্য হলোঃ স্ট্রাকচারাল, জিওটেক, ট্রান্সপোর্টেশন, হাইড্রলিক, এনভায়রনমেনটাল, ইত্যাদি। 

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর গুরুত্ত্ব এবং প্রয়োগ 

    সময়ের সাথে সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর গুরুত্ত্ব বাড়ছে। বর্তমানে তারা আগুন নিয়ন্ত্রণ নিয়েও কাজ করে। তারা আগুনে ক্ষয় ক্ষতি যেন কম হয় সেই বিষয়েও কাজ করে। পুরাতন মিশর এর পিরামিড বা রাস্তা নির্মাণে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর ভূমিকা উল্ল্যেখযোগ্য অবদান ছিল। প্রকৌশল বিজ্ঞান এর মধ্যে সবচেয়ে পুরানো হলো সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং। পানি, বাতাস এবং মাটি পরিশোধনের বিভিন্ন উপায় নিয়েও তারা এখন সজাগ।

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং গাইডলাইন

    কিভাবে সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায়

    একজন সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যেমন একজন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শিক্ষার্থীর লক্ষ্য, তেমনি সদ্য পাস করা ইঞ্জিনিয়ার বা প্রফেশনাল লাইফে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ারের ও লক্ষ্য। আপনি যদি একজন সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জন করতে চান তাহলে কিছু বিষয় মনের ভিতর গেথে রাখলে ক্যারিয়ারে সফল হতে পারবেন। তাই নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর আলোচনা করা হলঃ


    ১) ড্রয়িং সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞানঃ ড্রয়িং কে বলা হয় ইঞ্জিনিয়ারদের ভাষা। একজন ভালো সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর ড্রইং সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান থাকতে হবে। ড্রয়িং দেখলেই একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কাজের সঠিক দিক নির্দেশনা পেয়ে যাবেন এবং সেই অনুযায়ী কাজটি পরিচালনা করবেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের যদি ড্রয়িং বোঝার সমস্যা থাকে তাহলে সে যেমন কাজের সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারবে না আবার কাজটি সঠিকভাবে বুঝে নিতে ও পারবে না। তাই একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কলাম, বিম, স্লাব, ফাউন্ডেশন, লে-আউট, ইত্যাদি ড্রয়িংগুলোর বিস্তারিত জ্ঞান থাকতে হবে।


    ২) বিল্ডিং ম্যাটেরিয়াল টেস্টঃ একজন ভালো সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর কনস্ট্রাকশন ম্যাটেরিয়াল টেস্টের উপর প্রপার নলেজ থাকা উচিৎ। যেমন বালুর F.M, কংক্রিটের কম্প্রেসিভ স্ট্রেন্থ টেস্ট, রেইনফোর্সমেন্ট এর টেনসাইল স্ট্রেন্থ, বিটুমিন টেস্ট ইত্যাদি।


    ৩) কোয়ালিটি কন্ট্রোলঃ একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের সব সময় চেষ্টা করতে হবে একটা বিল্ডিং এর অতিরিক্ত খরচ কমানো। সেই সাথে তার বিল্ডিং কন্সট্রাকশন এর কোয়ালিটি যাতে ঠিক থাকে সেই ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে।


    ৪) এস্টিমেশন এবং বিলঃ এস্টিমেট করা এবং বিল করা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের অন্যতম দায়িত্ব। সুতরাং একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর এস্টিমেট করা এবং বিলের পরিমান নির্ধারণ করার বিষয়ে বিস্তারিত জ্ঞান থাকতে হবে। যেমন, রেইনফোর্সমেন্ট এর বার সিডিউল এর মাধ্যমে, রেইনফোর্সমেন্ট এর প্রকৃত দৈর্ঘ্য, ওজন, সংখ্যা সহজেই জানা যায়।


    ৫) কনস্ট্রাকশন কাজের স্ট্যান্ডার্ড কোড জানাঃ কনস্ট্রাকশন কাজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ কিছু আন্তর্জাতিক কোড ব্যবহার করা হয়ে থাকে যেমন, A.C.I, A.S.T.M। আবার প্রতিটা দেশ নিজস্ব কোড ও ব্যবহার করে। বাংলাদেশ এ বিল্ডিং ডিজাইন এর জন্য ব্যবহার করা হয় B.N.B.C। এই কোডগুলো সম্পর্কে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর বিস্তারিত জ্ঞান থাকতে হবে। এছাড়া ও সেট ব্যাক রুল ও F.A.R সম্পর্কে ও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

    একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কোথায় কাজ করেন 

    অবগকাঠামোগত নির্মাণের যেকোন কাজ ও প্রকল্পের সাথে সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা যুক্ত থাকেন। যেমনঃ


    ব্যক্তিগত বাড়ি নির্মাণ।

    আবাসন প্রকল্প।

    অফিস নির্মাণ প্রকল্প।

    বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প।

    সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্প।

    রেলপথ নির্মাণ ও মেরামত প্রকল্প।

    সেতু নির্মাণ প্রকল্প।

    বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প।

    কলকারখানা নির্মাণ প্রকল্প।

    বন্দর নির্মাণ প্রকল্প।

    আমাদের দেশে সরকারি বহু প্রতিষ্ঠানে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের পদ রয়েছে। যেমনঃ

    স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (LGED)।

    সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

    গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।

    পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশনের মতো প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষও বিভিন্ন প্রকল্পে নিয়মিত সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ দিয়ে থাকে। এছাড়া, সামরিক বাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।


    বর্তমানে বহু নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ও শিল্পকারখানায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করতে পারবেন। বিশেষ করে আবাসন বা রিয়েল এস্টেট খাতে এ পেশাজীবীদের চাহিদা লক্ষণীয়।

    সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা কি কি কাজ করে থাকেন 

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার প্রাচীনতম শাখা, এর ক্ষেত্র হল কিছু জিনিসের নকশা এবং নির্মান করা, সেগুলি হতে পারে রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর, সেতু, পানি সরবরাহ এবং নিস্কাশন ব্যবস্থা, বাধ, পোতাশ্রয়, রেলপথ, ফেরিঘাট, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা, ভবন এমনকি হতে পারে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্লান্ট। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারগণ বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করে থাকেন যেমন কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার, যানবাহন বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার, বিদ্যুৎ এবং সেচ ইঞ্জিনিয়ার, ভূ প্রকৌশল ইঞ্জিনিয়ার, পরিবেশ ইঞ্জিনিয়ার, এবং গণপূর্ত ইঞ্জিনিয়ার। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের অফিস এবং মাঠ উভয় পর্যায়ে কাজ করতে হয়। চুক্তিকারী এবং পরামর্শক ইঞ্জিনিয়ারদেরকে একই সময়ে বিভিন্ন স্থানে কাজ করতে হয়। তাদেরকে দুর্যোগ প্রশমন এবং ব্যবস্থাপনার মত সংকটময় পরিস্থিতির সমাধানও করতে হয়। নির্মাণ প্রকৌশলীরা তেল রিগস, বহুতল বিশিষ্ট গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা অথবা বাড়ির নকশা এমন ভাবে তৈরি করেন যাতে নির্মাণ কাঠামোটি যে ভার বহনের জন্যে তৈরি করা হয়েছে তা নিশ্চিৎ করা যায়। তারা নতুন নতুন নির্মাণ সামগ্রী ও কৌশল উদ্ভাবন করে থাকেন যেমন- বিশেষ ধরণের সেতু কাঠামো ও বিশেষ ধরণের বিল্ডিং কাঠামো ইত্যাদি। পানি ব্যবস্থাপনা ইঞ্জিনিয়াররা পানি সরবরাহ, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা এবং দূষণ নিয়ন্ত্রনের উপর বিশেষভাবে পারদর্শী হয়ে থাকেন। হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ারগণ সাধারণত রাস্তা ঘাটের পুননির্মাণ, ট্রাফিক লাইট, গলি, পার্কিং স্পেস ইত্যাদির পরিকল্পনা তৈরি করে থাকেন। হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ারগন প্রধানত রাস্তা নির্মান এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজের সাথে জড়িত।


    অবকাঠামো নির্মাণের জন্য পরিচালিত জরিপের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করা।

    সংগৃহীত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রকল্প পরিকল্পনা তৈরি করা।

    প্রকল্পের বাজেট, ঝুঁকি, পরিবেশের উপর প্রভাব ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয় খতিয়ে দেখা।

    প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সরকারি অনুমোদনের দরকার হলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া।

    কম্পিউটার মডেল বানানো।

    প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাঁচামালের খরচ, যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় কর্মীসংখ্যার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জানানো।

    প্রকল্পের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করা।

    প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রীর মান নিশ্চিত করা।

    প্রকল্প চলার সময় নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় কর্মকাণ্ডের তদারকি করা।

    প্রকল্পে নিযুক্ত কর্মীদেরকে উপযুক্ত নির্দেশনা দেয়া।

    প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত অবহিত করা।

    প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে কারিগরি পরামর্শ দেয়া।

    একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের যোগ্যতা থাকতে হয় ?

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের শিক্ষাগত যোগ্যতা

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আপনার অবশ্যই বিএসসি ডিগ্রি থাকতে হবে। তবে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীরা উপ-সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারেন।

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের বয়স

    প্রকল্পভেদে বয়সের সীমা নির্ধারিত হয়। সাধারণত আপনার বয়স কমপক্ষে ২০~২২ বছর হতে হবে।


    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের অভিজ্ঞতা

    এ পেশায় অভিজ্ঞদের প্রাধান্য রয়েছে। বিশেষ করে বড় প্রকল্পগুলোতে কাজ করার জন্য অভিজ্ঞতার কোন বিকল্প নেই।

    একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কী ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয় 

    এ পেশায় কাজ করতে হলে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে ভালো জ্ঞান থাকা আবশ্যক। পাশাপাশি নকশা ও মডেলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার সফটওয়্যার ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে আপনাকে। যেমনঃ


    AutoCAD

    AutoCAD Civil 3D

    Revit

    InfraWorks

    SAP 2000

    ETABS

    কারিগরি জ্ঞানের পাশাপাশি আরো কিছু দক্ষতা দরকার হবে আপনার। যেমনঃ


    চিন্তাভাবনায় সৃজনশীলতা থাকা।

    আঁকাআঁকির দক্ষতা।

    বিশ্লেষণী ক্ষমতা।

    খুঁটিনাটি বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারা।

    প্রকল্প ব্যবস্থাপনা।

    কর্মী ব্যবস্থাপনা।

    আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কারিগরি সমস্যা সমাধানের দক্ষতা।

    জরুরি অবস্থায় মানসিক চাপ সামলে সিদ্ধান্ত নিতে পারা।

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রধান শাখাগুলি

    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রধান ৭ টি শাখা আছে নিচে এগুলো নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলঃ


    স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং

    বাড়ি, হোটেল, পার্ক, ব্রীজ, বিল্ডিং ইত্যাদির উপরে নিজস্ব ভার বা বাইরের ভার প্রতিরোধ ক্ষমতা সহ বাতাস, পানি, ভুমিকম্প,তাপমাত্রা ইত্যাদির প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য সিমেন্ট, বালি, রি-ইনফোর্সমেন্ট, কাঠ, অন্যান্য উপাদানের সমন্বয়ে সঠিক ডিজাইন করা হলো এই শাখার কাজ।


    এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং

    পরিবেশ তথা বাতাস এবং পানির দুষণ রোধ, বিশুদ্ধকরণ ইত্যাদি করা এই শাখার কাজ। বর্তমানে এটি একটি গুরুত্বপুর্ন শাখা। বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, বর্জ্য, মল ইত্যাদি অপসারণ এবং বিশুদ্ধকরণ করা নিয়ে আলোচনা করা হয় এই শাখাতে।


    জিওটেকনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং

    প্রায় সকল সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখাতেই এটি কাজে লাগে। কারণ বেশির ভাগ স্ট্রাকচার ভুমির উপর অবস্থিত। মাটি বা পাথরের এর উপর স্ট্রাকচার এর প্রভাব এবং এদের বৈশিষ্ঠ্য নিয়ে আলোচনা করে এই শাখাটি। ভুগর্ভের সিপেজ,ভুমিকম্পের প্রভাব, স্থিতিশিলতা ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শাখাটি। বাধ, রিটেইনিং ওয়াল, ফাউন্ডেশন ইত্যাদির আংশিক ডিজাইন করা হয় এই শাখার মাধ্যমে।


    ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং

    পানি আমাদের জিবনে অনেক গুরুত্বপুর্ন এটা আমরা সবাই যেমন জানি, তেমনি এটাও ঠিক যে এটি অত্যান্ত্য সাধারণ একটি কথা। আবার এই পানি আমাদের মরণও ডেকে নিয়ে আসে। তাও আমরা জানি। পানি সম্পদ প্রকৌশল পানির ভৌত অবস্থা নিয়ে আলোচনা করে। বন্যা, শহরের-কারখানা-সেচ এর পানি সরবরাহ, নদি ভাঙ্গন রোধ, নদির শাষন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা এবং ডিজাইন করে থাকে। হাইড্রলিক পাওয়ার, বাধ, খাল, পানিধস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে এই শাখাটি।


    ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং

    কোন সমাজের বৈশিষ্ঠ্য বা গুন এর যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে। কোন সমাজের উন্নয়ন অনেকটা প্রভাবিত হয় এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। মানুষ, মালামাল ইত্যাদি পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে গবেষনা, ডিজাইন, সমস্যা, সমাধান নিয়ে কাজ করে ট্র্যান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং। অল্প রাস্তায় অধিক পরিবহন সুবিধা, দুর্ঘটনা কমানো, খরচ কমানো ইত্যাদি নিয়ে কাজ করে এই শাখাটি।


    কন্সট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং

    এই শাখাতে আলোচনা করা হয় যে কি ভাবে একটি কাঠামো গঠন করতে হবে। অর্থের ব্যবহার, সময়ের সংক্ষেপন, প্রয়োজনীয় মালামাল-যন্ত্রপাতি ইত্যাদির যোগান, কাঠামো গঠনের পদ্ধতি বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করা হয় শাখাতে।


    আরবান এবং কমিউনিটি প্লানিং

    নগরায়ণ এবং শহর পরিকল্পনা করা হয় মুলত একটি গোষ্ঠি নিয়ে কাজ করা। একটি গোষ্ঠি বা জোট এ কি কি লাগতে পারে এবং কিভাবে লাগাতে হবে তা নিয়ে গবেষণা করা হয় এই শাখাতে।


    সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য

    • পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো প্রকৌশলবিদ্যা হচ্ছে পুরকৌশল বিভাগ বা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং। আমরা যে বসবাসের জন্য এবং নিজস্ব কাজের জন্য উঁচু উঁচু দালান নির্মাণ করি এবং চলাচলের জন্য ব্রিজ ব্যবহার করি সেগুলো তৈরি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ মূলত Structural Engineer এসব কাজের জন্য নিয়োজিত থাকে।


    • যে রাস্তা দিয়ে আমরা যাতায়াত করি সেই রাস্তা নির্মাণ, রাস্তার উপর দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি চলাচলের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে তাদের গতিবিদ্যা নিয়ে কাজ করা হয় এই প্রকৌশল বিভাগে Transportation Engineering এর মধ্যে পড়ে।


    • মাটি বা সয়েল নিয়ে কাজ করা হয় এই বিভাগে। উঁচু উঁচু যে দালান নির্মাণ করা হয় সেগুলোর ভিত্তি থাকে মাটির নিচে। এই ভিত্তি হতে হয় মজবুত এবং ভারবাহী। এই ভিত্তি এমনভাবে তৈরি করতে হয় যেন ভূমিকম্প হলেও দালান মাটিতে বসে না যায় বা হেলে না পড়ে। এ বিষয় পড়ানো হয় Geotechinal Engineering এর ভিতর।


    • পরিবেশ প্রকৌশল (Environmental Engineering) নিয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়। এই বিষয়টিতে যেকোনো পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে গবেষণা করা হয়। ঘরে ঘরে মানুষ যেন বিশুদ্ধ পানি পেতে পারে সেজন্য যে যে বিষয় পড়ানো উচিত তার সব কিছু পরিবেশবিদ্যার মধ্যে পড়ে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আছে, যার নাম পানি সম্পদ প্রকৌশল বা Water Resource Engineering। বাঁধ তৈরি, বন্যা এবং খরা নিয়ন্ত্রণ, বিভিন্ন ঋতুতে ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় পানি বণ্টন ইত্যাদি বিষয়বস্তু পড়ানো হয় এই বিভাগে।


    • অবকাঠামো নির্মাণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয় হচ্ছে এর নির্মাণ খরচ। একবিংশ শতাব্দীর প্রকৌশলীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কীভাবে অবকাঠামোর বাইরের সৌন্দর্য বজায় রেখে জটিল জটিল ডিজাইন কম খরচে করা যায় সেটার উপায় বের করা। শুধু খরচ কম রাখলেই হবে না, কম খরচে ভালো কাঁচামাল ব্যবহার করে অনেক বেশি স্থায়িত্ব নিয়ে এই কাঠামো তৈরি করতে হবে। এই খরচের ভিতর কিন্তু আবার কাঠামো নির্মাণ করার পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংস্কার এই দুটোর জন্য যে খরচ হবে সেটাও ধরতে হবে।


    কোথায় পড়বেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং 

    বাংলাদেশের প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়। পাশাপাশি ভোকেশনাল বা পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটগুলো থেকে ডিপ্লোমা ডিগ্রি নেবার ব্যবস্থা রয়েছে। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট (IEB) অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়া শ্রেয়। এর কারণ হলো, কিছু কিছু জায়গায় আইইবির অনুমোদনহীন সার্টিফিকেটধারী ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ পেতে সমস্যা হয়।

    একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক আয় কেমন 

    প্রতিষ্ঠান ও কাজ ভেদে এন্ট্রি লেভেলে একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের মাসিক আয় সাধারণত ৳২০,০০০ থেকে শুরু করে অভিজ্ঞতা অনুযায়ী  ৳২,০০,০০০+ পর্যন্ত হতে পারে। সরকারি খাতে জাতীয় বেতন স্কেল অনুসরণ করে সাধারণত ৯ম জাতীয় গ্রেডে ৳৩২,০০০ স্কেলে নিয়োগ দেয়া হয়, যা পরবর্তীতে পদোন্নতির সাথে সাথে বেড়ে যায়।


    চাকরির পাশাপাশি অনেক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করে থাকেন। তবে এর জন্য কারিগরি কাজের অভিজ্ঞতা প্রয়োজন।


    একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে

    সরকারি-বেসরকারি প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে সহকারী ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে আপনার ক্যারিয়ার শুরু হবে। চাকরির ৩-৫ বছরের মধ্যে পদোন্নতি পাবেন। এ ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সরকারি পদ হলো প্রধান প্রকৌশলী। প্রাইভেট ফার্ম বা কোম্পানির ক্ষেত্রে একজন ব্যবস্থাপনা নির্বাহী হিসাবে নিয়োগ পেতে পারেন। যেমনঃ


    সরকারী চাকরিঃ পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপদ বিভাগ, এলজিইডি, এলজিডি, বাংলাদেশ রেলওয়ে, বাংলাদেশ সড়ক, পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআরটিএ, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সেনাবাহিনী, মিলিটারী ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস, ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন, বিভিন্ন বন্দর, ব্যাংকের ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি লিমিটেড, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লি, ইলেক্ট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিঃ, ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, পল্লী বিদ্যুৎ কোম্পানি লিমিটেড, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিঃ, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেড বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, ডিপার্টমেন্ট অফ পাবলিক হেলথ ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি।


    শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকঃ সরকারী ইউনিভার্সিটিসরকারী পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটসরকারী টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ইত্যাদি।


    বেসরকারী চাকরিঃ Real estate company, ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম, কন্সট্রাকশন ফার্ম, কনসাল্টেন্সি ফার্ম, পরিবেশ নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন multinational company, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ইত্যাদি।

    কিভাবে সফল সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হওয়া যায় , সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং , সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কি , সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার , সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং গাইডলাইন , সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বেসিক নলেজ , সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ব্লগ

    2 Comments

    Post a Comment
    Previous Post Next Post